সংস্কারবিরোধী দলের সঙ্গে জোট নয় : এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া বা ইতিহাসে দায়ভার রয়েছে—এমন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এনসিপির জোট গঠনের কোনো সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী পর্যটন মোটেল প্রাঙ্গণে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “এনসিপি এখন পর্যন্ত কোনো জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভবিষ্যতে যদি এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তা হবে সম্পূর্ণ নীতিগত বিবেচনায়। যারা সংস্কারবিরোধী, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের নতুন আকাঙ্ক্ষার বিরোধিতা করে, কিংবা যাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে দায়ভার রয়েছে—তাদের সঙ্গে জোটে যাওয়ার আগে আমাদের সতর্কভাবে চিন্তা করতে হবে। আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি, জনগণের আমাদের প্রতি অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। তাই নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখাই আমাদের অগ্রাধিকার।”

জুলাই সনদ নিয়ে মতামত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ সনদ বাস্তবায়নের পর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই গণভোটের ভিত্তিতেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদেশে স্বাক্ষর করবেন। বর্তমান সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতির পক্ষে এ আদেশে স্বাক্ষর করা সম্ভব নয়, কারণ এটি সাংঘর্ষিক হবে। তাছাড়া কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকলে আমরা তাতে স্বাক্ষর করব না।”

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং নির্বাচন ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ ও কিছু বিদেশি শক্তি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। আবার ১৪ দল জোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগের ধাঁচে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

শাপলা প্রতীক না পাওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারিতার নিদর্শন। তারা গায়ের জোরে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আমরা আমাদের প্রতীক আদায়ের আন্দোলন গড়ে তুলব।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন এবং রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়ক মোবাশ্বের হোসেন লাল্টু।