জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশনায় রোববার (১২ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে ময়মনসিংহের কোনো বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়নি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান ঢাকাগামী এক বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। রায়হান বারবার দুঃখপ্রকাশ করলেও শ্রমিক অরুণ ঝন্টু তার সঙ্গে অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে এবং বাস থেকে নামিয়ে দেয়।
ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টা থেকে ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকায় ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ পরে শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন সকাল ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাস এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন। এতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা দাবি তোলেন—দোষীদের দ্রুত বিচার, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের জেলা সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার এবং তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের সব বাস বন্ধের। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড সার্ভিসে আমিনুল হক শামীমের মালিকানায় ১৬টি বাস রয়েছে।
অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি ছিল আটক শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর মুক্তি ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্র প্রতিনিধি ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলোচনায় সমঝোতা হয় যে, আপাতত আমিনুল হক শামীমের মালিকানাধীন ১৬টি বাসের চলাচল বন্ধ থাকবে। এর পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করেন এবং শ্রমিকরাও অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির মহাসচিব আব্দুর রব আকন্দ রতন বলেন,
“ফেডারেশনের নির্দেশনায় সাময়িকভাবে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আলোচনা চলছে।”
এসআর
মন্তব্য করুন: