[email protected] শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫ আশ্বিন ১৪৩২

বন্ধ হতে যাচ্ছে ৪২ বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘মণিহার’ সিনেমা হল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

দেশের সর্ববৃহৎ ও একসময় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সিনেমা হল যশোরের ‘মণিহার’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।

 ৪২ বছরের ঐতিহ্য বহন করা এই সিনেমা হলটি দর্শকশূন্যতা, লোকসান আর নতুন মানসম্মত ছবির অভাবে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন এর কর্ণধার জিয়াউল ইসলাম মিঠু।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিনি জানান, ঈদ মৌসুম ছাড়া এখন আর মণিহারে দর্শকদের ভিড় থাকে না। লোকসান পুষিয়ে নিতে হলের সঙ্গে থাকা শপিং কমপ্লেক্স, হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘শুধু সিনেমা হল হিসেবে মণিহার হলে এতদিন আগেই বন্ধ হয়ে যেত।’

মিঠু বলেন, বর্তমানে নতুন বাংলা সিনেমার অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। কোরবানি ঈদের পর থেকে কোনো নতুন ছবি নেই। বাধ্য হয়ে বারবার পুরোনো টলিউড সিনেমা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো টেলিভিশন ও ইউটিউবে সহজলভ্য হওয়ায় দর্শক আর হলমুখী হচ্ছে না।

আর্ট ফিল্ম নিয়েও হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এসব ছবি সিনেপ্লেক্সেই টিকে না, সাধারণ হলে তো চলবেই না।’

দেশি ছবির অভাবে একসময় বলিউডের সিনেমা এনে হল সচল রাখার চেষ্টা করা হলেও এখন আমদানি বন্ধ। বিষয়টি হল মালিকদের জন্য আরও বড় ধাক্কা বলে জানান মিঠু। তার মতে, নিয়মিত ভালো মানের ছবি বা আমদানির সুযোগ ছাড়া সিনেমা হল টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আগে প্রতি সপ্তাহে দু-তিনটি ছবি আসত। এখন মাসেও নতুন ছবি পাই না। মাসে অন্তত দুটি ভালো ছবি পেলেই মণিহার টিকে যেত।’

১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পরপরই আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও বিশাল আসনসংখ্যা (১,৪০০) নিয়ে দ্রুত খ্যাতি পায় মণিহার। কিংবদন্তি শিল্পী এসএম সুলতানের তত্ত্বাবধানে এর অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা সম্পন্ন হয়। সে সময় থেকে ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসের অংশ হয়ে ওঠে এই হল।

কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় হল মালিকের শঙ্কা—যদি ছবি প্রযোজনা না বাড়ে এবং আমদানি অনুমোদন না মেলে, তবে শিগগিরই ঝড়ে যাবে ঐতিহ্যের নাম ‘মণিহার’।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর