[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫
১৩ ভাদ্র ১৪৩২

‘সময়মতো ক্লাসে আসেন না’ বলায় ৩৩ শিক্ষার্থীকে পেটালেন শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৭ আগষ্ট ২০২৫ ৩:২৪ পিএম

জয়পুরহাটের কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, শিক্ষক এম এ জি নাফসি তালুকদার নিয়মিত দেরি করে ক্লাসে আসেন—এমন মন্তব্য করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপর এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করেন।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এতে আহত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “তিনি ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করেছেন। এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউএনওর সঙ্গে বৈঠক করেছি। পরে তাকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক নাফসি তালুকদার প্রায় ২৫ মিনিট দেরি করে ১০টা ৪০ মিনিটে সপ্তম শ্রেণির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় নবম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী উচ্চস্বরে বলেন, “স্যার কখনো সময়মতো আসেন না, আজও দেরি করলেন। এখন আর কী ক্লাস হবে?”

এমন মন্তব্য শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি সপ্তম শ্রেণির কক্ষে না গিয়ে সরাসরি নবম শ্রেণিতে প্রবেশ করেন এবং কে এমন কথা বলেছে জানতে চান। শিক্ষার্থীরা চুপ করে থাকলে তিনি একযোগে মারধর শুরু করেন।

 

প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, দেরিতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অকারণে শারীরিক নির্যাতন করেছেন এম এ জি নাফসি তালুকদার, যা সরকারি চাকরিবিধি পরিপন্থি। কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী তিন দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

 

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা আক্তার জাহান বলেন, “শিক্ষার্থীরা সরাসরি আমার কাছে অভিযোগ করেছে। প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুপুরেই তাকে শোকজ করা হয়। তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ গুরুতর হওয়ায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণ, হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার এবং সরকারি জায়গা দখল করে দলীয় অফিস করা অন্যতম।

এ বিষয়ে এম এ জি নাফসি তালুকদারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর