বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে “নোবেল পুরস্কারের যোগ্য” আখ্যায়িত করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু।
রোববার (২৪ আগস্ট) কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,
“গ্রাম বাংলার মা-বোনদের সামাজিক বিবর্তন ও সাংস্কৃতিক জাগরণে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। সেই অবদানের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।”
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন।
বুলু বলেন, “১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া মেয়েদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেন, উপবৃত্তি চালু করেন। তখন অনেকে আপত্তি তুললেও তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন—‘আজকে যে মেয়েরা পড়াশোনা করছে, তারাই একদিন মা হবে। আর শিক্ষিত মা-ই শিক্ষিত প্রজন্ম গড়ে তোলে।’ তার এই সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের নারী সমাজের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “৯০-এর গণঅভ্যুত্থান খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের কারণেই সফল হয়েছিল। তখন চাইলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করতে পারত, কিন্তু তারা করেনি। বরং দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। এরপর ১৯৯১ সালে ব্যাপক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “শেখ মুজিব বাকশাল গঠন করে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ দেন। তখন আব্দুল মালেক উকিল তার কাছে আবেদন করে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চালুর অনুমতি চান। জিয়াউর রহমানের অনুমতি ও সহায়তাতেই আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হয়। সেদিন যদি তিনি অনুমতি না দিতেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকত না।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বুলু বলেন, “দেশি-বিদেশি অনেক শক্তিই বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ আজ বহু শক্তিধর দেশের নজরে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিই একমাত্র বিকল্প। আমরা উগ্র রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। যারা মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে অস্বীকার করে, তাদের দেশে ভোট চাওয়ার কিংবা রাজনীতি করার অধিকার নেই।”
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বুলু বলেন, “আপনারা এমন কোনো আচরণ করবেন না, যাতে দল, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কোনো হাইব্রিড যেন বিএনপিতে স্থান না পায়—সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর মাহমুদ ওয়াসিম, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি জসিম উদ্দিন এবং বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি এটিএম মিজানুর রহমান।
এসআর
মন্তব্য করুন: