[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫
১৩ ভাদ্র ১৪৩২

“১১ বছরের অপেক্ষার অবসান, উদ্বোধন হলো তিস্তার ভাসানী সেতু”

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ আগষ্ট ২০২৫ ৩:৪৮ পিএম

সংগৃহীত ছবি

উত্তর জনপদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে উদ্বোধন হলো গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী সড়কের ‘মওলানা ভাসানী সেতু’।

তিস্তা নদীর বুকে নির্মিত এ সেতুর মাধ্যমে দুই পাড়ের মানুষের স্বপ্নযাত্রা শুরু হলো আজ।

বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ প্রান্তে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন সুন্দরগঞ্জ জামে মসজিদের খতিব মুফতি মো. ওমর ফারুক। এরপর ফিতা কেটে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সেতুটি।

সকাল থেকেই সেতুর দুই প্রান্তে হাজারো মানুষের ভিড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। জীবনের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে আসেন সুন্দরগঞ্জ-চিলমারী উপজেলার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দুই জেলার অসংখ্য দর্শনার্থী। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডি কর্মকর্তা এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

  • দৈর্ঘ্য: ১৪৯০ মিটার
  • প্রস্থ: ৯.৬ মিটার
  • প্রকল্প ব্যয়: ৮৮৫ কোটি টাকা
  • নির্মাণ তত্ত্বাবধানে: চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড
  • অর্থায়ন: সৌদি সরকার
  • বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান: এলজিইডি

এটি দেশের ইতিহাসে এলজিইডির সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্প। সেতুকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক্সেস সড়ক, ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু

সেতুটি চালু হওয়ায় গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।

  • কৃষি ও শিল্পপণ্য পরিবহন সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।
  • ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে।
  • ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৪০-১০০ কিলোমিটার।
  • পর্যটন ও ছোট-মাঝারি শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে।
    এছাড়া অন্তত ১০টি স্থানীয় বাজার সড়কপথে সরাসরি সংযুক্ত হবে।

তবে সেতুর নামকরণকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। তাদের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা ও সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে সেতুটি নামকরণ করা উচিত ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে ‘তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করেছিলেন। তার প্রচেষ্টাতেই সেতুটি বাস্তবায়িত হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।

সরকার সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করে এ সেতুর নামকরণ করেছে ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’। যদিও নাম নিয়ে বিতর্ক আছে, তবু দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটায় দুই পাড়ের মানুষ এখন উচ্ছ্বসিত।

দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে আজ থেকে শুরু হলো উত্তর জনপদের মানুষের নতুন যাত্রা।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর