বরিশালে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করলেন ছাত্র–জনতা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল–ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে তারা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ‘সিন্ডিকেট ভাঙা’, অনিয়ম–দুর্নীতি বন্ধ এবং স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচি চলে। ফলে ঢাকার সঙ্গে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।
বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের নেতা মহিউদ্দিন রনি ঘোষণা দেন—স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সশরীরে শেবাচিমে এসে অনিয়মের তদন্ত ও দাবির পক্ষে স্পষ্ট আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। প্রয়োজনে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় অবরোধের মাধ্যমে পুরো দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
রনি অভিযোগ করেন, “১৬ দিন ধরে আন্দোলন চলছে, ছয় দিন ধরে ব্লকেড পালন করছি। এই দাবি শুধু বরিশালের নয়, সারা দেশের মানুষের দাবি হয়ে উঠেছে। অথচ মন্ত্রণালয়ের টনক নড়েনি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে সিন্ডিকেট চেপে ধরেছে।”
এদিন সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী তাহমিদ ইসলাম দাইয়ান ও সাফিন মাহমুদ শেবাচিমের সামনে আমরণ অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের শ্বাসকষ্ট ও হাত–পা অবশ হয়ে আসায় অনশনস্থলেই স্যালাইন ও অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা চলছে।
মঙ্গলবার শহরের সদর রোডেও কয়েক ঘণ্টা অবরোধ হয়, ফলে বিকল্প সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ পথ পায়ে হাঁটতে হয়। তবে জরুরি সেবার জন্য আন্দোলনকারীরা ইমার্জেন্সি লেন খোলা রাখেন।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরিশালের বিষয়ে ইতিবাচক এবং শিগগিরই সারাদেশে ৩ হাজার চিকিৎসক ও ৩,২০০ নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। বরিশাল তুলনামূলক বেশি চিকিৎসক–নার্স পাবে এবং দ্রুত একটি এমআরআই মেশিন, ক্যাথ ল্যাব ও সি–আম মেশিন সরবরাহ করা হবে। এজন্য তিনি তিন মাস সময় চান।
গত ১৬ দিন ধরে তিন দফা দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি অচলাবস্থায় থাকায় উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: