আড়াই বছর পর বিদেশ থেকে দেশে ফেরার খুশিতে ফেসবুকে লিখেছিলেন—‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’।
কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই রূপ নেয় ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে। দেশে ফিরেই স্বজন হারানোর বেদনায় বাকরুদ্ধ হলেন ওমানপ্রবাসী মো. বাহার উদ্দিন।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জগদীশপুর এলাকায় চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে গেলে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হন বাহারের মা, স্ত্রী, শিশু কন্যা ও আরও চার স্বজন—মোট সাতজন।
নিহতরা হলেন—বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)।
তারা সবাই লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে দ্রুতগতির মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালের পানিতে পড়ে যায়। চালক গাড়ি থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যান।
বাহারসহ পাঁচজন জানালা ভেঙে বের হতে পারলেও বাকি সাতজন পানির নিচে আটকা পড়ে মারা যান।
স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে ডুবুরি চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা না থাকায় উদ্ধারকাজ বিলম্ব হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় গাড়িটি তোলা হলে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া জানান, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। গাড়িতে মোট ১৩ জন ছিলেন। চালক পলাতক থাকলেও গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
নোয়াখালীর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, “মাইজদী ও চৌমুহনী স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট কাজ করেছে। আমাদের নিজস্ব ডুবুরি না থাকায় চাঁদপুর থেকে ডুবুরি আনা হয়, তবে তার আগেই মরদেহ উদ্ধার শেষ হয়।
বাহারের আত্মীয় মো. সুমন বলেন, “একসঙ্গে এতো প্রিয়জনকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ। পুরো পরিবারটাই শেষ হয়ে গেছে।
শোকস্তব্ধ এলাকাবাসীর চোখে এখন শুধু কান্না আর শূন্যতা।
এসআর
মন্তব্য করুন: