[email protected] শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২

যশোর রেস্ট হাউসে নারীসহ অবস্থান, ওসি ও ছাত্রদলের মধ্যে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২৫ ৮:৫১ পিএম

সংগৃহীত ছবি

যশোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।

এ সময় সেখানে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপস্থিতি এবং পরবর্তী হট্টগোল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

ঘটনাটি ঘটে ৩০ জুন সন্ধ্যায় যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউসের ‘কপোতাক্ষ’ কক্ষে। সিসিটিভি ফুটেজ ও কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউসে প্রবেশ করেন ওসি সাইফুল ইসলাম। প্রায় দুই ঘণ্টা পর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি কয়েকজন সহযোগী নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রদল নেতারা দরজায় ধাক্কা দিলে ওসি বেরিয়ে আসেন। এরপর উত্তেজনাকর বাকবিতণ্ডা, ধাক্কাধাক্কি এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই সময় রেস্ট হাউসের আনসার সদস্য ও এক কর্মচারীও মারধরের শিকার হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছাত্রদল নেতারা ওসি ও সঙ্গে থাকা নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন।

রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল ইসলাম স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে কক্ষে ওঠেন এবং নিজেই রুম বুঝিয়ে নেন। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় লোকজন রেস্ট হাউসে এসে হট্টগোল শুরু করে।

রেস্ট হাউসের ইনচার্জ উপসহকারী প্রকৌশলী তরুণ হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিঠির ভিত্তিতে ওসিকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ওসি সাইফুল নারীকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।

যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, “চিঠির ভিত্তিতে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তী ঘটনাগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে।”

ঘটনার বিষয়ে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, “একজন নারী বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে যশোরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলাম। রেস্ট হাউসে অবস্থানকালে পরিচিত কয়েকজন ছাত্রনেতা এসেছিল, কারো সঙ্গে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”

অন্যদিকে ছাত্রদল নেতা গোলাম হাসান সনি দাবি করেন, তিনি স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান, তবে সেখানে কোনো নারী ছিলেন না। তবে সিসিটিভি ফুটেজে তার দলবলসহ উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় তার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, “ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দল এসব বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী বলেন, “সনি বর্তমানে ছাত্রদলে নেই, তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।”

তবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব রাজেদুর রহমান সাগর বলেন, “সনি এখনও দুই পদেই আছে। ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের দায় দল নেবে না। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, “রেস্ট হাউসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।”

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর