পাটগ্রাম থানায় হামলা: দুই আসামি ছিনতাই, ওসিসহ আহত ২৩ জন

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ অন্তত ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, প্রায় ২০০-২৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল পাটগ্রাম থানায় হঠাৎ হামলা চালায়। তারা থানা চত্বরে ঢুকে চেয়ার, টেবিল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ভাঙচুর করে এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
হামলাকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে থানার জানালার কাচ ও দরজা ভেঙে ফেলে। পুলিশ বাধা দিলে উভয়পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে; তবে এতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, হামলাকারীরা পুলিশের কাছ থেকে জোর করে হাজতখানার তালার চাবি নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি বেলাল হোসেন ও সোহেল রানা চপলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ দুজনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বুধবার সন্ধ্যায় সরোরবাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ তাদের এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

ওসি মিজানুর রহমান বলেন, হামলায় জড়িতদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। তাদের অনেককে চিহ্নিত করা হয়েছে।

একই দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন:

“বিএনপি নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে পাটগ্রামে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে। হাতেনাতে ধরা পড়ার পর তাদের ছিনিয়ে আনতেই পরিকল্পিত এই হামলা হয়।

তবে বিএনপির পাটগ্রাম উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান সোহেল পুলিশের দাবি নাকচ করে বলেন:

“এটি বিএনপির সঙ্গে পুলিশের কোনো সংঘর্ষ নয়। মূল ঘটনা জড়িত পাথর কোয়ারি ইজারাদারদের সঙ্গে—এর রাজনৈতিক রং দেওয়া হচ্ছে।”

ঘটনার পরপরই লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, ডিআইজি ও জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার পেছনে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

• স্থান: পাটগ্রাম থানা, লালমনিরহাট
• সময়: ২ জুলাই রাত ১০:৩০টা
• আসামি ছিনতাই: সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি
• আহত: ২৩ পুলিশ সদস্য, দুজন গুরুতর
• পুলিশের অভিযোগ: বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পরিকল্পিত হামলা
• বিএনপির পাল্টা দাবি: এটি রাজনৈতিক নয়, কোয়ারি-সংক্রান্ত বিরোধ
• পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে: অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন