একটি লিচুর দাম ১৮ টাকা!

দিনাজপুরের বিখ্যাত বেদানা লিচু এবার পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের সনদ।

এর ফলে বাড়ছে জেলার লিচুর কদর ও বিক্রি। তবে বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকায় বেদানা লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৬ থেকে ১০ টাকা দরে।

অন্যদিকে, জিআই সনদ না পেলেও আকারে বড় ও রসালো হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেড়েছে চায়না-থ্রি জাতের লিচুর। এক আঁটি (১০০টি) চায়না-থ্রি লিচুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১৮০০ টাকা, অর্থাৎ প্রতিটি লিচুর দাম দাঁড়াচ্ছে ১৮ টাকা!

সোমবার দিনাজপুর শহরের কালিতলা নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে রিকশাভ্যান, পিকআপ, ভটভটি, ইজিবাইকসহ নানা পরিবহনে প্রচুর লিচু এসেছে। ফলে পুরো বাজারে লিচু কেনাবেচার ব্যস্ততা লক্ষ করা গেছে।

চায়না-থ্রি বিক্রেতা লিটন আলী জানান, তিনি বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামের খুরশেদ আলমের বাগান থেকে ৬ হাজার লিচু কিনেছেন ৯০ হাজার টাকায় — গড় মূল্য প্রতিটি ১৫ টাকা। পরিবহন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তিনি ১৮ টাকার কমে বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে।

একই বাজারে রুবেল রানা নামের আরেক বিক্রেতা বেদানা লিচু বিক্রি করছেন আকারভেদে ৮ থেকে ১০ টাকা দরে। তার ভাষ্যে, আজ সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলকভাবে কম। তবে সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।

তবে বিক্রেতাদের এই মূল্য যৌক্তিক মনে করছেন না অনেক ক্রেতা। যেমন, ঢাকায় মেয়ের বাড়িতে লিচু পাঠাতে আসা আব্দুস সাত্তার বলেন, “দাম খুব বেশি। ৫০০টি বেদানা লিচু কিনতে হয়েছে ৯ টাকায়।”

বাজারে অনুসন্ধানে জানা গেছে,

• চায়না-থ্রি জাতের লিচু: ১০–১৮ টাকা
• বেদানা জাতের লিচু: ৬–১০ টাকা
• মাদ্রাজি ও বোম্বাই লিচু: আড়াই–৪ টাকা

কালিতলা ফল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রুস্তম আলী বলেন, বর্তমানে বাজারে প্রতিদিন অন্তত ৫০ লাখ লিচু বিক্রি হচ্ছে। এতে গড়ে ৩–৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। প্রতিদিন এখান থেকে ১৫–২০ ট্রাক লিচু দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দিনাজপুর জেলায় ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৯৮টি লিচু বাগান রয়েছে। এবারের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন এবং সম্ভাব্য বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।