[email protected] রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

সাজেকে পুড়ে ছাই ৯৪ রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ, দোকান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৬ পিএম

ফাইল ছবি

রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার দুপুরে সংঘটিত এই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৯৪টি রিসোর্ট, দোকান, রেস্তোরাঁ ও বসতঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে।

দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে প্রাথমিকভাবে রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার, শর্টসার্কিট কিংবা সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণে পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, পরে তাদের নিরাপদে খাগড়াছড়িতে সরিয়ে নেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকেই প্রথম আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুত আশপাশের রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘরে ছড়িয়ে যায়। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনগণ আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

বাঘাইছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি ও দীঘিনালাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় নেয়। বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, স্থানীয় জনগণ প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে, পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যোগ দেয়। দীঘিনালা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দল পৌঁছাতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণ জানিয়েছেন, আগুনে ৩২টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসতঘর, ২০টি দোকান ও ৭টি রেস্তোরাঁ পুড়ে গেছে। এসব স্থানের কোনো মালপত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, সিগারেট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াশ ইয়াসিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, আগুনের সূত্রপাত শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানান, বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও আশপাশে পানি ছিটিয়ে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়া রোধ করা হয়েছে। সাজেক পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আগুন নেভাতে পানির সংকটে পড়তে হয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানিয়েছেন, আগুনের সূত্রপাত নিয়ে তদন্ত চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সাময়িকভাবে সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক প্রবেশ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর