কক্সবাজারে ইয়াবা চোরাচালানের ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহারের পর এবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ সাত পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, ইয়াবা চোরাচালান সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এর আগে একই ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়। এ ঘটনার তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, "দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার দুটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আমাদের তদন্তে সহায়ক হয়েছে। তাদের প্রকাশিত তথ্য সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ইতোমধ্যে দুই এসপিকে ক্লোজ করা হয়েছে।"
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কক্সবাজারের পুলিশের ইয়াবা কারবারের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়,
৬ জানুয়ারি ভোরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া থেকে ৪ লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবাসহ একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো জব্দ করা হয়। অভিযানে ডিবির ওসি জাহাঙ্গীর আলম ও এসআই সমীন গুহ নেতৃত্ব দেন। তারা চারজনকে আটক করলেও, ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনজনকে ছেড়ে দেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সেদিন ডিবির অভিযানে মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু পুলিশ অধিকাংশ ইয়াবা আত্মসাৎ করে এবং তা গোপনে বিক্রি করা হয়।
এই ঘটনার খবর প্রকাশের পর কক্সবাজার পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। একের পর এক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: