অবশেষে জাহাজে খুন হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া গেছে।
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মাঝির বাজার এলাকায় নোঙর করা সারবহনকারী জাহাজ "আল বাখেরাহ" থেকে উদ্ধারকৃত সাত জনের লাশের পরিচয় মিলেছে। আহত একজনকেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল, মাজেদুল ইসলাম।
নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। আহত ব্যক্তি হলেন জুয়েল।
নিহত ও আহতদের বাড়ি ফরিদপুর ও নড়াইল জেলায়।
নৌ পুলিশ জানায়, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। সিআইডি, পিবিআই এবং পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাটি উদঘাটনে কাজ করছে। চাঁদপুর নৌ থানার ওসি এইট এম ইকবাল জানান, এটি ডাকাতির ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতের স্বজনরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। একইসঙ্গে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নৌযান শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। তারা দোষীদের শাস্তি এবং নিহত প্রতি পরিবারের জন্য ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
এসব দাবি পূরণ না হলে ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা।
সারবহনকারী "আল বাখেরাহ" জাহাজটি রোববার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। জাহাজের মালিক শিপন অনেকবার ফোন করেও জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে, "মুগনি" নামক অন্য একটি জাহাজ মাওয়া এলাকা দিয়ে অতিক্রম করার সময় "আল বাখেরাহ" জাহাজটিকে মাঝির বাজার এলাকায় দেখতে পায়।
জাহাজে থাকা কর্মীদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তারা ৯৯৯-এ ফোন দেয়। পরে, সোমবার বিকেলে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাত জনের লাশ এবং আহত জুয়েলকে উদ্ধার করে।
নৌ পুলিশ জানায়, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
এটি দেশের নৌপথে একটি ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা নৌযান নিরাপত্তা ও শ্রমিক সুরক্ষার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এনেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: