চট্টগ্রামে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হয়েছেন।
তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছে, সাইফুল আলিফকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ইন্ধনে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২৬ নভেম্বর সকাল ১১টায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করলে, আসামিপক্ষের ইসকনপন্থি আইনজীবীরা আদালতে হট্টগোল শুরু করে এবং অশালীন মন্তব্য করে। এর পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারী কয়েকজন আসামি এবং অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা প্রিজনভ্যানের সামনে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে বাধা প্রদান করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আসামিরা আদালত চত্বর ছাড়ার সময় মসজিদসহ আইনজীবী ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর একইদিন বিকালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাইফুল ইসলাম আলিফ তার বাড়ি ফেরার পথে আক্রমণের শিকার হন। তার মুখে দাঁড়ি দেখে আসামিরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তারা বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নামে জয়ধ্বনি দেয়।
জামাল উদ্দিন তার এজাহারে দাবি করেছেন যে, এই হত্যাকাণ্ডটি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ইন্ধনে সংঘটিত হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ছেলের দাফন-কাফন ও জানাজা সম্পন্ন করে এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলোচনা করে ঘটনার ভিডিও ও স্থিরচিত্র সংগ্রহের পর মামলা দায়ের করতে কিছুটা সময় বিলম্ব হয়েছে।
গত মঙ্গলবার, কোতোয়ালি থানায় বিএনপির সাবেক এক নেতার দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর তাকে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় চিন্ময়ের অনুসারীরা তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং এর পরেই সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এসআর
মন্তব্য করুন: